পথিকের অদেখা দুনিয়া: ধুলোর ভিতর থেকে আলো

 


 🌫️ সর্বহারা পথিকের ছন্নছাড়া অস্তিত্ব 🌫️

— মাতোয়ারা পথকষ্টের হতচ্ছাড়া একাকীত্ব, আর অদেখা সত্যের ভ্রমণ


জীবনকে কখনো কি পথের মতো মনে হয়েছে?

যেখানে মোড়ে মোড়ে গল্প, আর গল্পের ভেতরে অনিশ্চয়তা?

সেই অনিশ্চয়তার ভিতরেই জন্ম নেয় এক “সর্বহারা পথিক”—

যার নিজের নামে কোনো ঠিকানা নেই,

কেবল কিছু ভাঙা স্বপ্ন,

আর কিছু না চাওয়া পথের ক্লান্ত স্মৃতি।


পথিকের সবচেয়ে বড় পরিচয়—তার ছন্নছাড়া অস্তিত্ব।

যে অস্তিত্ব সমাজ বোঝে না,

শুধু বিচার করে।

মানুষ ভাবে—সে বোধহয় হারিয়ে গেছে।

কিন্তু আসলে?

সে-ই হয়তো সবচেয়ে বেশি খুঁজে বেড়ায় জীবনের খাঁটি রূপ।


ধুলো কাঁধে, ভেজা বাতাস গায়ে,

রাতের নীরবতাকে সে নিজের ভাষায় পড়ে।

তার মনে কোনো অহং নেই, কোনো দাবি নেই—

শুধু আছে একটা অদ্ভুত মাতোয়ারা ভাব,

যা তাকে বারবার নতুন পথে টেনে নেয়।

এই মাতলামি মদের নয়,

এই মাতলামি স্বাধীনতার…

যা শুধু পথিকরাই বুঝতে পারে।


তার একাকীত্বটাও অন্যরকম।

এটা কোনো দুর্বলতা নয়, কোনো শূন্যতা নয়।

বরং একাকীত্ব তার শিক্ষক—

যে শেখায় কাকে ভুলতে হবে, কাকে ক্ষমা করতে হবে,

আর কাকে একেবারে জীবনের বাইরে ছুঁড়ে ফেলতে হবে।


পথিকের জীবন আকর্ষণীয় হয় ঠিক এই কারণে—

সে বাঁচে নিজের মতো,

হারায় নিজের মতো,

আর খুঁজে পায় নিজের মতো।

তাকে কেউ আটকাতে পারে না—

কারণ সে জানে,

পথ যতই অন্ধকার হোক,

একসময় আলো জ্বলে ঠিকই।


তার চোখে ক্লান্তি থাকে,

তার পায়ে কষ্ট থাকে,

তবুও তার হৃদয়ে ভাঙার মতো কিছু থাকে না।

কারণ সে ইতোমধ্যেই হারানোর শেষ সীমা পাড়ি দিয়েছে।


এভাবেই পথিক নিজের ভেতরেই আরেকটা পৃথিবী বানায়—

একটা পৃথিবী, যেখানে ভিড় নেই, বিচার নেই,

শুধু আছে স্রেফ নিজের মতো করে বেঁচে থাকার সাহস।


সর্বহারা পথিক আসলে সর্বস্ববান মানুষ—

কারণ সে স্বাধীন।

কারণ সে নির্ভয়ার।

কারণ সে নিজের গল্প নিজেই লেখে,

এবং নিজের যাত্রা নিজেই পূর্ণ করে।


এটাই তার ছন্নছাড়া অস্তিত্বের আসল সৌন্দর্য।

এটাই তার মাতোয়ারা পথকষ্টের নেশা।

এবং এটাই তার হতচ্ছাড়া একাকীত্বের অদ্বিতীয় দুনিয়া।


লেখক :- মোহাম্মদ মামুনুল ইসলাম চৌধুরী 

সৌদি আরব প্রবাসী 

Comments

Popular posts from this blog

মায়ের কোল থেকে প্রবাস—ভালোবাসার দূরত্ব নয়

প্রবাসীর জীবনে বাস্তব কিছু কথা…

একটা সাদা ফুলের গল্প